পটিয়ায় ২৭ কোটি টাকা সেতু নির্মাণ কাজ ফেলে টিকাদার উদাও, চরম ভোগান্তি
পটিয়া চট্টগ্রাম থেকে সেলিম চৌধুরীঃ-
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা শিকলবাহা খালের উপর এস আলম বার্জে ধাক্কায় ২০০৭ সালে ১৮ নভেম্বর ভেঙ্গে যাওয়া পর থেকে টেন্ডার আহবান করে ঠিকাদার ধীর গতিতে কিছু কাজ করে সেতুর কাজ ফেলে টিকাদার উদাও হয়েছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) ২৭ কোটি টাকার একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুর কাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও হয়ে যাওয়ার ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষের দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
পটিয়ার শিকলবাহা খালের ওপর নির্মিতব্য আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর নামে সেতুটির নামকরণ করা হয়। এটির উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সডক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
২০০৭ সালের ১৮ নবেম্বর সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর নতুনভাবে সেতু নির্মাণের জন্য প্রথমবার ২২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় সেতু মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কিছুদিন কাজ করলেও এক পর্যায়ে কাজ বন্ধ করে চলে যায়। পরবর্তীতে দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৭ সালে এটি ২৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা নতুনভাবে বরাদ্দ দেয় মন্ত্রণালয়।
সেতুটির পশ্চিম পাড়ে রয়েছে কর্ণফুলী উপজেলা এবং পূর্ব পাড়ে রয়েছে পটিয়া উপজেলা। দুই উপজেলার লোকজন ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বোয়ালখালী উপজেলার লোকজন প্রতিদিন ঝুঁকির মধ্যে এখন মাএ ২টি নৌকা নিয়ে পারাপার হচ্ছে। বর্তমানে সেতুর পূর্ব পাড়ে (পটিয়া) সেতুর ঠিকাদার বেশকিছু লোহার রড ও মালামাল রেখে উধাও হয়ে গেছে। ফলে মোহাম্মদনগর, কোলাগাঁও, মুন্সিরহাট, লাখেরা, পাঁচুরিয়া, কুসুমপুরা, জিরি, বোয়ালখালীসহ আশপাশের লোকজনকে চলাচলের চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। তবে মানুষের ভোগান্তির বিষয়টি ইতোমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য হুইপ
সামশুল হক চৌধুরীকে জানিয়ে ঠিকাদারকে আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। কি কারণে ঠিকাদার কাজ ফেলে চলে গেছেন তা কেউ নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, সওজের সঙ্গে যোগসাজশ করে ঠিকাদার সময়ক্ষেপণ করে কৌশলে বাড়তি টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনদিন কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।
সওজ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিকলবাহা খালটি কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে যুক্ত। খালের দুই পাড়ে রয়েছে বেশ কিছু শিল্প কারখানা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পটিয়া উপজেলার লাখেরা উচ্চ বিদ্যালয়, কালারপোল হাজি ওমরা মিয়া চৌধুরী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, কালারপোল অহিদিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, এজে চৌধুরী স্কুল এ্যান্ড কলেজ ছাড়াও পাশে কয়েকটি বিদ্যুত কেন্দ্র রয়েছে।
এলাকার লোকজন ছাড়াও শিল্প কারখানার কর্মচারীদের খাল পারাপারে এখন কষ্টের সীমা নেই। ১৯৯৫ সালে শিকলবাহা খালে প্রথম সেতু নির্মাণ হয়। এটি ২০০৭ সালের ১৮ নবেম্বর একটি কারখানার টিনের কয়েল বোঝাই বার্জের আঘাতে সেতুর ৩য় ও ৪র্থ স্প্যান নদীতে পড়ে যায়। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ২০০৯ সালের এপ্রিলে কংক্রিট বেইজড গার্ডার সেতু নির্মাণের জন্য ২১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা
সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। পটিয়ার প্রকৌশলী মোঃ শাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে ঠিকাদারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একজন সাব ঠিকাদার কিছুদিন কাজ করে আবার বন্ধ করে চলে যায়। বিষয়টি তিনি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে জানাবেন। ঐ এলাকায় বাসিন্দা ব্যাবসায়ি সাবেক ছাএনেতা মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, সেতু নির্মাণ না হওয়ায় তার পরিবার ও ছেলে- মেয়ের লেখা পড়ার বিগ্ন ঘটেছে এ কারণ সে নিজ গ্রাম ছেড়ে চট্টগ্রাম নগরীতে বসবাস করতে হচ্ছে।

No comments